রুপের গৌরব
অনেক রমণী রুপের গৌরবে পা মাটিতে দেন না। তারা মনে করেন, তাদের রুপের ঝড় যেদিকে বয়, সেদিক ধর্ম্মকোটা ভেংগে পড়ে। এসব ভেবে অনেকে আকাশ-পাতাল, পশু-পাখী, কীট-প্রতংগ, লতা পাতা নিয়ে তুলনামূলক টানাটানি করেন। অনেকে আবার অপমানী দৃষ্টি ব্যাখ্যা করে থাকেন।
সকল সৌন্দর্য্যর বিষয়ে রমণীর পাধাণ্য স্বীকার করেন। বিদ্যা, বুদ্ধি ও বলে পুরুষের শ্রেষ্টত্ব স্বীকার পেয়েও, রুপের দিক দিয়ে নারীরাই শ্রেষ্ঠ। আমার দৃষ্টিতে এটি অনেক বড় ভুল। পুরুষের তুলনায় নারীদের রুপ অনেক কম। হে মাননীয় মোহিনীগণ তোমাদের নিন্দা করতে ভয় লাগে। পথ বুঝে যে তোমারা অনেক অনেক ফাদ পেপে রাখো।
স্রীলোকের সৌন্দর্য্যর অনেক অভাব, তারা সর্বদা আপন রুপ বাড়াইতে ব্যাস্ত থাকে। যে উপায়ে রুপ বাড়ানো নায় সে উপায় খোজতে উন্মাদ থাকে। অলংকারই তাদের একমাত্র জপ, অলংকার তদের ধ্যান, অলংকারই তাদের জ্ঞান।
স্ত্রীজাতির চেয়ে পুরুষজাতির সৌন্দর্য্য অধিক, তা প্রকৃতির আলোচনায় স্পষ্ট। যে বিস্তীর্ণ চন্দ্রকলাপ দেখে ইন্দ্রধনু হার মেনেছে, সে চন্দ্রকলাপ ময়ূরের আছে, ময়ূরীর নাই। যে কেশরে সিংহের এতো শোভা, তা সিংহীর নাই। যে ঝুটিতে ষাড়ের কান্তু বৃদ্ধি করে তা ঘাভীর নাই। এমনিভাবে উচ্চ শ্রেণীর জীবদের দেখা যায়, স্ত্রী অপেক্ষা পুরুষ সুশ্রী। স্ত্রীরা যতোই বিদ্যাপতি হোক, পুরুষের সৌন্দর্য্য ও বুদ্ধির নিকট তাদের পরাজিত হতেই হবে।
সুন্দরীরা পরস্পরের সৌন্দর্য্য স্বীকার করতে চায় না, অথচ পুরুষের ভক্ত হয়ে ওঠে। এতেই বুঝা যায় যে, মনেমনে তারা পুরুষের রুপের সাথে তাদের রুপেক্ষা পক্ষাপাতিনী। রুপ রুপ করেই স্ত্রীলোকের সর্বনাশ হয়েছে। সকলেই ভাবে, রুপই কামিনীফুলের মহামূল্যা ধন, রুপই কামিনী ফুলের সব। মহিলাগণ যা কিছু চান পুরুষ কেমল রুপের বিনিময়েই তা দিতে চায়। আর এতেই মানবসমাজে কলংকের সৃষ্টি। এতেই পরিবারে স্ত্রীলোকের দায়িত্ব।
অস্থায়ী সৌন্দর্য্য যে একমাত্র সম্বল তা আমি আর শুনতে চাই না। আমি শুনতে চাই যে, নারীজাতির রুপের চেয়ে শত গুণ, সহস্রাধিক, লক্ষ ও কোটি গুণে মহত্বের গুণ রয়েছে তাদের। শুধু তারাই দেখিয়েছেন যে, কত কষ্ট সহ্য করে জননী সন্তানের লালল পালন করেন। তারা দেখিয়েছেন যে, কতো যত্নে পীড়িত আত্বীবর্গের সেবা করেন। তারাই পুত্রের জন্য জীবন বিসর্জন, ধর্মের জন্য বাহ্যসুখ বিসর্জন দিয়েছেন।
আমি দেখি যে, চিতা জ্বলছে আর সেই চিতায় পতির পদ বরণ করে সেই আগুনের মধ্যে সাধ্বী বসে আছে। আস্তে আস্তে আগুন জ্বলে সেই আগুন এক অংশ পুড়িয়ে অন্য অংশে অগ্রসর হচ্ছে। আর অগ্নিদগ্ধা ধ্যানমগ্ন হয়ে মাঝে মাঝে হরিবোল হরিবোল বলছে। তখন আমি ভাবি, মহত্বের বীজ তো আমাদের অন্তরেও নিজিত আছে...! কখনো কি আমরা মহত্ব দেখাতে পারবো না?
হে পুরুষগণ- তোমরা এ ধরনীর রত্ন! তোমাদের মিথ্যা রুপের বড়াইয়ে কাজ কি?
